সুন্দরবনের ব্যাঘ্র প্রকল্প ও আশপাশের দ্বীপ গুলি প্লাস্টিক মুক্ত এলাকা ঘোষনা করলেন মন্ত্রী,বনকর্মীদের হাতে তুলেদেন জ্যাকেট ও মশারি-
নিজস্ব প্রতিনিধি |সজনেখালি | সুন্দরবনের ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকা ও বিভিন্ন দ্বীপ গুলি কে প্লাস্টিক বর্জিত এলাকা হিসাবে ঘোষণা করা হল। শুক্রবার এই প্রকল্পের সুচনা করেন রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয় কৃষ্ণ বর্মন।সুন্দরববন এলাকা থেকে শুধু প্লাস্টিক নয় থার্মোকল ও বর্জন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।প্লাস্টিক ব্যাবহার করলে পরিবেশে কি কি ক্ষতি হতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করা হয়।গ্রামবাসী দের সঙ্গে সঙ্গে এলাকার ছাত্র ছাত্রী দের ও প্লাস্টিকের বর্জ সম্পর্কে আলোচনা করে বোঝানো হয়।প্লাস্টিক ব্যাবহার করলে পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গে গৃহপালিত পশু,বাদাবনের বিভিন্ন প্রানী এবং মানুষের কি কি ক্ষতি সেই সম্পর্কে ও স্থানীয় দের অবগত করা হয়।এ দিন সুন্দরবনের দয়াপুর দ্বীপে প্লাস্টিক, পলিথিনের মাধ্যমে দূষন ও তার ক্ষয়ক্ষতি সংক্রান্ত আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।আলোচনায় অংশ নেন অভিনেতা রাজ চক্রবর্তী, রাজ্যের মূখ্য বনপাল রবিকান্ত সিনহা,ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফিল্ড ডিরেক্টর নিলাঞ্জন মল্লিক ও অতিরিক্ত ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর অনিন্দ্য গুহ ঠাকুরতা ও বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর।
শুধু দ্বীপে দ্বীপে প্রচার চালানো নয় বিভিন্ন কমিটি গঠন করে এলাকার মানুষ কে সচেতনতার পাশাপাশি যাহাতে কেউ প্লাস্টিক ব্যাবহার না করা তা লক্ষ রাখবে কমিটি।এছাড়া এদিন সজনেখালিতে ডাব্লু ডাব্লু এফ উদ্যোগে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ১৭০জন বনকর্মী কে বনমন্ত্রী শীতের জ্যাকেট ও মশারি তুলে দেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নে বনমন্ত্রী বলেন ক্যানিং মাতলা নদীতে প্লাসটিক ফেলছে বেশকিছু দোকানদার ও মানুষজন এমন ধরনের খবর পাওয়া গেছে।বিষয়টি বিভাগীয় দফতরের আধিকারিকদের বলা হয়েছে দেখার জন্য এবং মানুষজনকে সচেতন করে তুলতে বলা হয়েছে।ডাব্লু ডাব্লু এফ সুন্দরবন কডিনেটার রাতুল সাহা বলেন সুন্দরবনের পরিবেশ নিয়ে কাজ করছে ডাব্লু ডাব্লু এফ।জীববৈচত্র্যের সংরক্ষণ এবং বাঘের খাদ্য নিয়ে ২০১০সালে পর্যালোচনা করা হয়।সুন্দরবনের লুথিয়ান দ্বীপে জঙ্গলে সর্ব প্রথম ২০ টি ক্যামেরা বসানো হয়।সেখানে উঠে আসে হরিন ও শিয়ালের বসবাস।পরবর্তীকালে চুলকাটি জঙ্গলে ক্যামেরা বসানো হয়।৩০০ টি লোকেশনে ক্যামেরা পাতা হয়েছিল।তিনি আরও বলেন ১৭০ জন বনকর্মীর হাতে শীতের জ্যাকেট ও মশারি তুলে দেওয়া হল।মোট ৩০০ জন বনকর্মী কে এই জ্যাকেট ও মশারি তুলে দেয়া হবে।ফলে বনকর্মীরা উৎসাহ পাবে।গত বছর বাঘ সুন্দরবন জুড়ে যে বাঘ সুমারি হয়ে ছিল তাতে বনকর্মীদের অবদান ছিল অসীম।রাজ্যের মুখ্য বনপাল রবিকান্ত সিনহা বলেন পলিথিনের পরিবর্তে কাপড় বা চটের বাগ ব্যবহার করে আপনার অঞ্চল কে পরিস্কার রাখুন।সুন্দরববন আমাদের গর্ব।তিনি আরও বলেন ভারত বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে তিন টি পর্যায়ে বাঘ গননা করবে সুন্দরবন জুড়ে।ক্যামেরা পাতা হবে ১৪১০টি।প্রত্যেক গ্রিটে একটি করে ক্যামেরা পাতা হবে।খালগুলেতে সার্ভে করা হবে।৪০ টি টিম করা হবে।প্রত্যেক টিমে চার থেকে পাঁচ জন করে থাকবে।এবার বাঘের মল,পায়ের ছাপ সহ বিভিন্ন বিষয়ে ডাটা সংগ্রহ করা হবে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে।তৃতীয় পর্যায়ে ক্যামেরা বসানো হবে ।ইতিমধ্যে ১৫-১৭ জানুয়ারি সজনেখালিতে প্রশিক্ষিকদের প্রশিক্ষন হয়ে গেছে।প্রশিক্ষণে বাংলাদেশের চারজন ডি ও এফ অংশগ্রহণ করেন।বাংলাদেশের সুন্দরবন আর এখানকার সুন্দরবন জঙ্গলে ১৯২ টি বাঘের সংখ্যা উঠে এসেছে।প্রতি চার বছর অন্তর বাঘ গননার কাজ হয়।তবে এবার ভারত বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে বাঘ গননা অনেক উঠে আসবে বাঘের সংখ্যা।এদিন দয়াপুরে শের সংগঠনের উদ্যোগে রাজ্যের বনমন্ত্রী এক হাজার ছাত্র ছাত্রীর হাতে তুলে দেন ওয়টার প্রুফ বাগ ও স্কুলের সরঞ্জাম।চিত্র পরিচালক রাজ চক্রবর্তী বলেন আপনারা পারেন বাদাবনকে বাঁচাতে।তাই স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের এগিয়ে আসতে হবে মানুষকে সচেতন করে তুলতে প্লাসটিক ও থার্মোকল বর্জনে।এদিনের অনুষ্ঠানে সাধারণ মানুষের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতন।