সুন্দরবনের বিদ্যা নদীতে বাঘকে তাড়া করা ট্রলারটি চিহ্নিত করন করল বন দফতর
বিদ্যা নদীতে এফ বি জবা ট্রলারটি এই ভাবে তাড়া করছে বাঘটিকে এবং একটি বাঁশ দিয়ে পেটানোর চেষ্টা করছে ট্রলারের মৎস্যজীবীরা।
রায়দিঘী।সোশ্যাল মিডিয়া তে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে একটি মাছের ট্রলার নিয়ে তাড়া করছে বাঘকে তার কিনারা বের করল বন দফতর,জেলা পুলিশ এবং মৎস্যজীবীর ইউনিয়ন গুলির যৌথ অভিযানে।শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চিরুনী তল্লাশি চালিয়ে খোঁজ বের করে ট্রলারের নাম সহ বিস্তারিত ঘটনা গুলি।
উল্লেখ্য গত ১৮ জুন দক্ষিণ ২৪পরগনার রায়দিঘী থানার রায়দিঘী জেটিঘাট থেকে এফ বি জবা ট্রলারটি ছাড়ে ১৩ জন মৎস্যজীবী কে নিয়ে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে।ট্রলারের মাঝি ছিলেন রায়দিঘীর বাসিন্দা দিলীপ সামন্ত এবং ট্রালের মালিক বিজয় দাস।ট্রলাটি গভীর সমুদ্রে মাছ ধরে রায়দিঘী ফিরছিল গত ২৫ জুন।আর ফেরার সময়ে বিদ্যা রেঞ্জর জঙ্গল থেকে একটি বাঘ বেরিয়ে বিদ্যা নদীতে সাঁতার কেটে পাড়ের দিকে যাচ্ছিল।সেই সময়ে বিদ্যা নদীতে জোয়ারের জল বইছিল।আর বাঘটি কে নদীর জোয়ারের জলে সাঁতার কাটতে দেখে এফ বি জবা ট্রলারটি তাড়া করে বাঘকে।আর ট্রলারে থাকা এক মৎস্যজীবী সেই দৃশ্য গুলি মোবাইলে ভিডিও করে।আর সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়া তে।ভিডিও টি বন দফতরের কাছে এলে তদন্ত শুরু করে তারা বিভাগীয় দফতরের সহ যোগিতায়।ভিডিও দেখা যায় নদীতে জোয়ারের সময় একটি বাঘ সাঁতার কেটে পার হচ্ছে।আর সেই সময় মৎস্যজীবীরা ট্রলার টি কে নিয়ে বাঘটিকে তাড়া করছে মার মার শব্দ শোনা যাচ্ছে।আর বাঘটিকে নদীর জোয়ারের জলে নাকানিচোবানি খেতে দেখা যাচ্ছে ভিডিও টিতে।কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত ধাওয়া করা হয় বাঘটিকে।এক সময় বাঘটি পাড়ে উঠে জঙ্গলে দিকে চলে যায়।স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে রায়দিঘীর বাসিন্দা এফ বি জবা ট্রলারটি মালিক বিজয় দাস এই ঘটনাটি জানতে পেরে বিষয়টি কোন মতে সমর্থন করেনি।তিনি এ বিষয়ে লিখিত ভাবে জানিয়েছে রায়দিঘী ফিসার ম্যান অনার ওয়েল ফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনকে।ট্রলারে যে ১৩ জন মৎস্যজীবী ছিল তারা সকলেই রায়দিঘীর বাসিন্দা।রায়দিঘী ফিসার ম্যান অনার ওয়েল ফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রবীন দাস বলেন একটি ট্রলার নিয়ে বাঘকে তাড়া করছে যে ভিডিও টি সোশ্যাল মিডিয়া তে ঘোরাঘুরি করছিল সেই ট্রলারটি চিহ্নিত করন হয়েছে।ট্রলারের মালিক এ বিষয়ে লিখিত ভাবে জানিয়েছে এবং এই ধরনের ঘটনা কে তিনি কোন মতে সমর্থন করেনি।এ বিষয়ে বন দফতর কে জানানো হয়েছে।তিনি আরও বলেন এমন ধরনের ঘটনা সত্যি খুবই দুঃখজনক।এটা কোন মতে সমর্থন করা যায় না।আইনী যে পদক্ষেপ আছে তা নেওয়া হবে যারা এমন ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে।তবে বাঘ ও মৎস্যজীবীদের সংঘাত এড়াতে বিভাগীয় দফতরের উচিত যে সমস্ত মৎস্যজীবীরা সুন্দরবনের নদীতে মাছ কাঁকড়া ধরতে যায় সেই সমস্ত মৎস্যজীবীদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সচেতন করে তোলা ও বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া।এ বিষয়ে বিভাগীয় দফতরে জানানো হবে।সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফিল্ড ডিরেক্টর নিলাঞ্জন মল্লিক বলেন বেশ কিছু দিন ধরে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়া তে ঘোরাঘুরি করছি একটি ট্রলার নিয়ে বাঘকে তাড়া করছে নদীর জোয়ারের বাঘটি সাঁতার কেটে পাড়ে যাওয়ার সময়।ভিডিও টি দেখে তদন্ত নেমে ট্রলারটি চিহ্নিত করন করা হয়েছে।ট্রলারটি রায়দিঘীর ট্রলার এ বিষয়ে জানা গেছে।বিষয়টি জেলা পুলিশ কে জানানো হয়েছে এবং দেখতে বলা হয়েছে।ট্রলারের লাইসেন্সবাতিল করার বিষয়টি ভাবা হচ্ছে এবং যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।তিনি আরও বলেন যে স্থানে এমন ধরনের ঘটনা ঘটেছিল সেই সমস্ত এলাকা বন দফতরের কর্মীরা চিরুনী তল্লাশি চালাচ্ছে।কেন এমন ধরনের ঘটনা ঘটলো সে বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।