ক্যানিং মাতলা নদীর পাড়ে কেরলের মডেলে নারকেল সহ ফলের বাগান মাতলা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে

ক্যানিং মাতলা নদীর পাড়ে  কেরলের মডেলে নারকেল সহ ফলের বাগান মাতলা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে 



নিজস্ব প্রতিনিধি|ক্যানিং|দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের ক্যানিং-১ ব্লকের মাতলা-১ গ্রাম পঞ্চায়েত ও ক্যানি-১ সমিষ্টি করন আধিকারিক এবং ক্যানি-১ খাদ্য প্রক্রিয়াকরন শিল্প ও উদ্যান পালনের দফতরের উদ্যোগে ক্যানিং মাতলা নদীর পাড়ে এই সর্ব প্রথম গড়ে উঠেছে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে কেরলের মডেলে নারকেল সহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলের গাছের বাগান।আর এই কাজ কে বাস্তবে রুপান্তরিত করতে কোমড় বেঁধে নেমে পড়েছে মাতলা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের জব কার্ডের বেনিফিসারিরা।
ক্যানিং মাতলা নদীর পাড়ে রোপন চলছে নারকেল গাছের চারা।

প্রথম পর্যায়ে ক্যানিং মাতলা নদীর পাড়ে রোপন হবে ৩০০ টি নারকেল গাছের চারা।আর এই রোপন কাজে জব কার্ডের বেনিফিসারিরা ইতিমধ্যে ক্যানিং এস ডি ও রোডে মাতলা নদীর পাড়ে ১০০ টি নারকেল গাছের চারা রোপন করে ফেলেছে।পাশাপাশি ২৫০ টি সুপারি গাছের বীজ রোপন করেছে তারা।এছাড়া আম,জাম, কাঠাল,লিচু, জামরুল, পিয়ারা, আমলকি, কলা,কুল সহ বিভিন্ন প্রজাতির ফল গাছের চারা রোপন করে ফেলেছে।জব কার্ডের বেনিফিসারিরা প্রায় বিভিন্ন প্রজাতির ৭০০ টি ফল গাছের চারা রোপন করেছে।এমনকি এর সঙ্গে প্রায় এক হাজার নিম গাছের চারা রোপন করছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার্থে জব কার্ডের বেনিফিসারিরা।আর এই বৃক্ষ রোপনের মডেল জেলা থেকে শুরু করে রাজ্য স্তরে ছড়িয়ে পড়েছে।
জব কার্ডের বেনিফিসারিরা নারকেলের চারা নিয়ে যাচ্ছেন।      

বেশ কয়েক জন মহিলা জব কার্ডের বেনিফিসারিরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অক্লান্ত পরিশ্রম করে গড়ে তুলছে বিভিন্ন প্রজাতির ফল ও নিম গাছ ক্যানিং পুরাতন নৌকাঘাট রোড থেকে মাতলা ব্রীজ পর্যন্ত।আর এর মধ্যে মডেল হিসেবে তারা তুলে ধরেছে কেরলের মডেলে নারকেল গাছের চারা রোপন।নারকেল আমাদের দেশে একটি অর্থকারী ফসল।নারকেল গাছ কে বলা হয় কোকাস লুসিফেরা।কচি নারকেল কে বলা হয় ডাব।আর ডাবের জলে পটাশিয়াম ও সোডিয়াম থাকে।২৪০ মিলি নারকেল জলে থাকে ৪৫ ক্যালরি।এমনকি নারকেলের জলে মানুষের শরীরে জলের শূন্যতা পূরন করে,রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনের সহায়ক এবং মস্তিষ্ক,পেশী শক্তি ঠিক রাখে।নারকেলে খনিজ উপাদান পাওয়া যায়।তারন্য ধরে রাখে।নারকেলের জলে আছে সেইটোকাইনস যা তারন্য ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং এ উপাদান ক্যান্সার দমনেও সহায়তা করে।নারকেলে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট দেহের বিষাক্ত মৌলগুলিকে শোষন করে।এমনকি রোগ প্রতিরোধের সহায়ক নারকেল।ফলে নারকেলের জলে প্রচুর পুষ্টি উপাদান ও ভিটামিন থাকে।নারকেলের শাঁস দিয়ে নানা রকম খাবার তৈরি হচ্ছে।এমনকি নারকেল তেল,নারকেল পাতার কাঠি থেকে ঝাড়ু,নারকেলের ছোবরা দিয়ে দড়ি,বিছানার সোপা তৈরী হচ্ছে।নারকেলের সব টাই অর্থকারী।যার জন্য নারকেল কে বলা হয় অর্থকারী ফসল।ক্যানিং-১ খাদ্য প্রক্রিয়াকরন শিল্প ও উদ্যান পালন দফতরের ফিল্ড  কনসাল্টেন্ট আশুতোষ কয়াল বলেন চলতি বছরে এই ব্লকে ২ হাজার বিভিন্ন প্রজাতির ফল গাছের চারা তুলে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন পঞ্চায়েত গুলিকে।বিশেষ করে নারকেল, আম,পিয়ারা জামরুল,কাঠাল গাছের চারা তুলে দেওয়া হয়েছে।তিনি আরও বলেন লবনাত্ব এলাকায় নারকেল গাছের চারা খুব উপযোগী।যার জন্য নারকেল গাছের উপর একটা আলাদা ভাবে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।মাতলা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ভি এল ই কমলাকান্ত সাহা বলেন ক্যানিং মাতলা নদীর পাড়ে ফলের বাগান তৈরি হচ্ছে ১০০ দিনের  কাজের প্রকল্পের মাধ্যমে।


এবার নারকেল গাছ সহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলের বাগান গড়ে তোলা হচ্ছে।ফলে এক দিকে যেমন প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা হবে।তেমনি ভূমি ক্ষয়ে সহায়তা করবে নারকেল গাছ সহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছগুলি।পাশাপাশি আর্থিক ও সামাজিক পরিকাঠামো মজবুত হবে।ফলে বহু মানুষের কর্মসংস্থান গড়ে উঠবে।তিনি আরও বলেন এই সমস্ত বৃক্ষ রোপনের ফলে গড়ে উঠবে ক্যানিং মাতলা নদীর সৌন্দর্য।ফলে সুন্দরবনের পযটকদের আর্কষন বাড়বে এবং গড়ে উঠবে পিকনিক গার্ডেন ক্যানিং মাতলা নদীর পাড়ে।মাতলা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের জব কার্ডের বেনিফিসারি কাকলী পাল, মলিনা হালদার, ভাস্বতী সরদার, রানী বালা পাল, মীনারানী পাল, লীলা বিশ্বাস,লক্ষ্মী সরকার, আশালতা সরকার প্রমূখ জব কার্ডের বেনিফিসারিরা বলেন পরিকল্পনা নিয়ে  ক্যানিং মাতলা নদীর পাড়ে নারকেল গাছের চারা রোপন করা হচ্ছে কেরলের মডেলে।এই নারকেল গাছ যেমন অর্থকারী ফসল,তেমনি নারকেল গাছের শিকড় নদীর বাঁধের পাড়কে শক্ত রাখবে।ফলে ভূমি রোধে নারকেল গাছ সহায়ক।পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করবে।তারা আরও বলেন নারকেল গাছের পাশাপাশি আরও বিভিন্ন প্রজাতির ফল গাছের চারা এবং নিম গাছের রোপন করা হচ্ছে।রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বলেছেন ভালবেসে গাছ লাগান।তাই তার আদর্শ কে সামনে রেখে জব কার্ডের বেনিফিসারিরা বৃক্ষ রোপন করে চলেছে ক্যানিং পুরাতন নৌকাঘাট রোড থেকে মাতলা ব্রীজ পর্যন্ত।এমনকি চারা গাছ গুলিকে বাঁচিয়ে রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন