নুরসেলিম লস্কর, বাসন্তী : পরীক্ষায় আকৃতকার্য হওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের পরবর্তীতে শ্রেণীতে তুলে দেওয়া থেকে শুরু করে পড়ুয়াদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের মতো কিছু অভিযোগ তুলে বিদ্যালয়ের মূল গেটে তালাবন্ধ করে বিক্ষোভ দেখালো প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীরা। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে বাসন্তী ব্লকের রামচন্দ্রখালি নরেন্দ্র শিক্ষা নিকেতনে। পরে কিছু সহ-শিক্ষকদের আশ্বাসে প্রায় কয়েক ঘণ্টা পরে যদিও বিক্ষোভ তুলে নেওয়া হয় ছাত্র-ছাত্রীদের তরফ থেকে।আর এদিনের এই বিক্ষোভ সম্পর্কে ছাত্র-ছাত্রী ও স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে যে ,এই রামচন্দ্রখালি নরেন্দ্র শিক্ষা নিকেতন স্কুলের প্রধান শিক্ষক আনন্দ বক্সী একাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায় আকৃৎকার্য হওয়া কিছু ছাত্র-ছাত্রীদের কে সকলের চক্ষু আড়ালে, সেই সব ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকদের কাছ থেকে অসৎভাবে কিছু সুযোগ সুবিধা নিয়ে তাদেরকে দ্বাদশ শ্রেণীতে উত্তীর্ণ করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। আর এই বিষয়টি এতো দিন যাবৎ কেউ জানতেও পারেনি।
কারণ,একাদশ শ্রেণীতে আকৃতকার্য ছাত্র-ছাত্রীরা আবার একাদশ শ্রেণীতে ও উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীরা দ্বাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে তারা নিয়মিত ক্লাস করছিলো। কিন্তূ এখন যখন দ্বাদশ শ্রেণীর টেস্ট পরীক্ষা শুরু হয়েছে তখন দেখা যায় একাদশ শ্রেণীতে আকৃতকার্য হওয়ার পর যারা আর স্কুলে আসতো না তেমন কিছু ছাত্র-ছাত্রী দ্বাদশ শ্রেণীর টেস্ট পরীক্ষা দিচ্ছে । আর এই ঘটনার কথা জানতে পারেন অভিভাবকরা ও ছাত্র-ছাত্রীরা। আর তখন থেকেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জমছিল। তার বহিঃপ্রকাশ ঘটলো বৃহস্পতিবার। এদিন দুপুর দু-ঘটিকায় দ্বাদশ শ্রেণীর টেস্ট পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর একাদশ শ্রেণীর ছাত্র, ছাত্রী ও দ্বাদশ শ্রেণীর কিছু ছাত্র, ছাত্রী এবং ঐ স্কুলের কিছু প্রাক্তন ছাত্রদের দেখা যায় স্কুলের মূল গেটে তালা দিয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে। তাদের দাবি একাদশ শ্রেণীতে উত্তীর্ণ না হয়ে এবং পর্ষদের নিয়ম অনুসারে বিদ্যালয়ে ৭৫ শতাংশ উপস্থিতির হার না থাকার পরও এই ছাত্র-ছাত্রীরা কিভাবে দ্বাদশ শ্রেণীতে পরীক্ষা দিচ্ছে? তার জবাব প্রধান শিক্ষক কে দিতে হবে এবং তিনি কোন নিয়মে? কেন এমন কাজ করলেন? তারও উত্তর তাঁকে দিতে হবে।
তবে এই ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আনন্দ বক্সী বিদ্যালয়ে না আসার ফলে কিছু সহ-শিক্ষকের আশ্বাসে বিক্ষোভ তুলে নেন বিক্ষোভকারী ছাত্র, ছাত্রীরা। সহ-শিক্ষকদের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয় যে, আজ প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত তাই তাদের প্রশ্নের জবাব প্রধান শিক্ষক যে দিন বিদ্যালয়ে আসবেন সেদিন তিনি নিশ্চয় দেবেন।আর এদিন এবিষয়ে ঐ স্কুলের সহ-প্রধান শিক্ষক কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “যে ছাত্র, ছাত্রীদের বিরুদ্ধে একাদশ শ্রেণীতে আকৃতকার্য হওয়ার পরও দ্বাদশ শ্রেণীতে উত্তীর্ণ করে দেওয়া অভিযোগ উঠছে। তারা পরে পরীক্ষার খাতা রিভিউ করে এবং সেখানে তারা উত্তীর্ণ হয় বলে তিনি জানান। তার পর সহ-প্রধান শিক্ষক কে প্রশ্ন করা হয় যে, সে নয় হলো কিন্তূ ঐ ছাত্র, ছাত্রী দের কি অ্যাটেন্ডেন্স খাতায় নাম রয়েছে? এবং সেখানে ৭৫ শতাংশ উপস্থিতি কি ঐ ছাত্র, ছাত্রীদের আছে? তখন তিনি এই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে জান এবং বলেন যে, এর উত্তর আপনারা প্রধান শিক্ষকের থেকে জেনে নেবেন। আমি ঠিক জানিনা।
আর এদিনের এই বিক্ষোভ সম্পর্কে এক ছাত্রী বলেন,”আমরা আজ বিক্ষোভ দেখাবো সেই খবর প্রধান শিক্ষক আগে কোথাও থেকে হয়তো জেনে গিয়েছেন তাই তিনি আজ স্কুলে আসেন নি এবং আমাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন না বলে আগে থেকেই স্কুলে পুলিশ দিয়ে ঘিরে রেখেছেন। তবে আজ আমরা বিক্ষোভ তুলে নিলেও কি হবে! প্রধান শিক্ষক যে আসবেন সেদিন কিন্তূ আমরা আবার বিক্ষোভ দেখাবো আর সেদিন কিন্তূ আমাদের প্রশ্নের সমস্ত উত্তর ওঁনাকে দিতে হবে “।