সুন্দরবনে মোহনবাগান ফ্যান্স ক্লাবের উদ্যোগে মহিলা ফুটবল প্রতিযোগিত
নুরসেলিম লস্কর,বাসন্তী : প্রত্যন্ত সুন্দরবনে ভারতের জাতীয় ক্লাব মোহনবাগানের ফ্যান্স ক্লাব চোরাডাকাতিয়া সুন্দরবন মোহনবাগান ফ্রান্স ক্লাবের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো বিরাট আট দলের মহিলা ফুটবল প্রতিযোগিতা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর চোরাডাকাতিয়া গ্রামের কয়েকজন সবুজ মেরুন ভক্ত ২০১৮ সালে এই ফ্যান ক্লাব গড়ে তুলেছিলেন, তাদের মাতৃ সমগ্র মোহনবাগানকে ভালোবেসে ও সুন্দরবনের পিছিয়ে পড়া এলাকার ছেলে-মেয়েদের ক্রীড়া জগতের নতুন পথ দেখাতে। সেই শুরু এবং সেই লক্ষ্যে আজও অবিচল রয়েছেন তারা। তাইতো আজ কয়েকজন থেকে ক্লাবের সদস্য সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় পঞ্চাশের কাছাকাছি।
আর,তাই দুদিন ব্যাপী ধরে অনুষ্ঠিত হওয়া তাদের ষষ্ঠ বর্ষের “বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,বস্ত্র বিতরণ ও সংস্কৃতিকে অনুষ্ঠানের” প্রথম দিনে ক্লাবের পতাকা উত্তোলন করে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন ক্লাব সভাপতি সাবির হোসেন সেখ ও সম্পাদক, শরদিন্দু মাঝি। তারপর বর্তমানে রাজ্য তথা সমগ্র দেশের রক্ত সংকটের কথা মাথায় রেখে তারা ক্যানিং মহাকুমা হসপিটালের সহযোগিতায় প্রথমে স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেন। যে রক্তদান শিবিরে প্রায় ৫০ জন রক্তদাতা রক্ত দান করেন। সেই সঙ্গে প্রথম দিনের অনুষ্ঠান সূচিতে তবলা প্রতিযোগিতা, নৃত্য প্রতিযোগিতা, সংগীত প্রতিযোগিতা সহ অঙ্কন প্রতিযোগিতার মতো নানান প্রতিযোগিতার ও আয়োজন করেছিলেন তাঁরা। আর সুন্দরবনের মেরিনার্সদের আয়োজিত এই প্রতিযোগিতা গুলিতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিযোগিরা অংশ নিয়েছিলেন। আর উক্ত প্রতিযোগিতা গুলির প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানাধিকারীদের হাতে পুরস্কার সহ একটি করে মানপত্রও তুলে দেওয়া হয় এদিন।
আর এই অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনে অনুষ্ঠিত হয় ৮ দলের মহিলা ফুটবল প্রতিযোগিতা। যে প্রতিযোগিতায় নদীয়া,মুর্শিদাবাদ,গঙ্গাসাগর সহ এরাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের ফুটবল দলগুলি অংশগ্রহণ করেন। আর সোমবার সকাল দশটায় এই মহিলা ফুটবল প্রতিযোগিতার শুভ উদ্বোধন করেন বাসন্তী পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা বাসন্তীর জননেতা রাজা গাজি ও বাসন্তী ফুলমালঞ্চ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মেহেরুন্নেসা মোল্লা। আর এই মহিলা ফুটবল প্রতিযোগিতার ফাইনালে মুখোমুখি হয় গঙ্গাসাগর খাসরামকর স্পোর্টস এন্ড ক্যালচারাল একাডেমি ও তাড়দহ উইমেন্স ফুটবল একাডেমি।প্রথম অর্ধ গোল শুন্য থাকার পর দ্বিতীয় অর্ধে গঙ্গাসাগরের হয়ে গোল করেন সদ্য সমাপ্ত হওয়া কন্যাশ্রী কাপে ইস্টবেঙ্গল দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করা গঙ্গাসাগর দলের অধিনায়িকা সন্ধ্যা মাইতি।
আর সন্ধ্যার করা ঐ এক মাত্র গোলে তাড়দহ কে এক -শুন্য গোলের ব্যাবধানে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয় গঙ্গাসাগর। এই প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ গোল দাতা ও এই প্রতিযোগিতার সেরা ফুটবলার সহ ফাইনাল ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ও তিনি নির্বাচিত হন।এরপর চ্যাম্পিয়ন দলের হাতে স্বর্গীয় মাখন চন্দ্র মন্ডল স্মৃতি ট্রফি সহ নগদ বারো হাজার টাকা তুলে দেন বাসন্তী বিধায়ক শ্যামল মন্ডল ও বাসন্তী পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যা মনীষা ঘোরামি সেই সঙ্গে রানার্স দল তাড়দহ উইমেন্স ফুটবল একাডেমির হাতে স্বর্গীয় আমিয় গিরি স্মৃতি ট্রফি সহ নগদ দশ হাজার টাকা তুলে দেন ক্লাবের ক্রীড়া সম্পাদক গৌতম মাইতি ও সহ সভাপতি আসিফ লস্কর। আর এছাড়াও এদিনের এই মহিলা ফুটবল প্রতিযোগিতায় অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, উলুবেড়িয়া পূর্বের বিধায়ক তথা বিশিষ্ট প্রাক্তন ফুটবলার বিদেশ রঞ্জন বসু ও প্রাক্তন ফুটবলার মানস ভট্টাচার্য সহ সুন্দরবনের বিশিষ্ট সমাজসেবী লোকমান মোল্লা, সুন্দরবনের বিশ্বজয়ী, বিশ্ব পরিব্রাজক সোমেন দেবনাথ ও আরো বিশিষ্ট অতিথিগণ। আর দু-দিন ব্যাপী এই ক্রীড়া অনুষ্ঠান ক্লাব সহ ক্রীড়া সম্পাদক স্বপন জানার নেতৃত্বে ক্লাবের যুব সভাপতি প্রিয়তি মাইতি, যুব সম্পাদক এরশাদ হোসেন শেখ সহ ক্লাব সদস্য সৌভিক মন্ডল , বিল্টু সরদার , বিক্রম মন্ডল , আকাশ মাইতি , উজ্জ্বল মন্ডলরা সহ সমস্ত সদস্য,সদস্যা পরিচালনা করেন।