সুন্দরবনের মেয়েদের ফুটবল খেলার অনুপ্রেরণা দিচ্ছেন মায়া স্পোর্টস একাডেমি
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝড়খালীঃ প্রাকৃতিক দুর্যোগ সহ বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছে সুন্দরবন মানুষের জনজীবন। যে মানুষগুলোর কাছে নুন আনতে পান্তা ফুরায় তাদের কাছে ফুটবল খেলা একটা বিলাশিতা মনে করতেন তারা। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে সবকিছু পরিবর্তন ঘটেছে।
কোনো আড়ম্বর নয়। নিছক প্রেম বিলোতে এসেছিলেন সুন্দরবনের শিশুদের মধ্যে। এতদিন তারা দেখে এসেছে , বাবুরা ফুলের তোড়া নিচ্ছেন , ব্যাচ পরছেন আরও কত কী ! না ফুল দুব্য নয়।
ধুলো মাখা শিশুদের বুকের মধ্যে আগলে নেওয়া একজন সহজ সরল মানবিক মেয়েকে দেখলেন সুন্দরবনবাসী। গ্রামের মানুষ অন্তরে প্রশান্তি অনুভব করছে।
এতক্ষণ যাঁর কথা বলছিলাম তিনি বিশিষ্ট সমাজসেবী শ্রদ্ধেয় হীরেন সিংহরায় মহাশয় এঁর কন্যা মায়া সিংহরায়।
সুদূর ইংল্যান্ড থেকে এই প্রথম মায়া সুন্দরবনে এসে জয় করে নিলেন ধুলোমাখা রুগ্ন মানুষ গুলোর মন। সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করলেন মায়া। হ্যাঁ শুধুই মায়া। তিনি নিজেই বললেন “নো ম্যাডাম অনলি মায়া “।
২২ তারিখ সকালে বাসন্তীর রানিগড় গ্রামে ছোট্ট শিশুদের পড়ার সামগ্রী বিতরণ করে ছুটে গেলেন আরও ১৫ কিমি দূরে ঝড়খালীর শহীদনগর গ্রামের খাগেন্দ্রনাথ স্মৃতি মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের ছাত্র ছাত্রীদের কাছে। সেখানে তাঁর কথা শুনে আবেগে আপ্লুত এলাকার মানুষ। সারাটা দিন নিজের হাতে সমস্ত কাজ করলেন। এভাবেই যে মানবসেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে হয় সেটা বোধ হয় খুব কম দেখেছেন। চল্লিশ জন শিশুর হাতে তুলে দিলেন ফুটবল খেলার জুতো , বল , জার্সি, প্যান্ট ,গার্ড , স্ল্যাক্স, মোজা সহ খেলার যাবতীয় সামগ্রী। খেলার মাঠে মেয়েদের আবদার পূরণ করতে পিছপা হননি। তাদের সঙ্গে সময় দিলেন যথেষ্ট। বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রী সহ গ্রামের সাধারণ মানুষ মিলিয়ে একটি উৎসব মুখর হয়ে ওঠে গোটা দিন।
এদিন ছেলেমেয়েদের খেলায় উৎসাহ বাড়াতে মায়েরাও ফুটবল পায়ে নিয়ে মাঠে নেমে পড়েন। যা দেখে অবাক হয়ে যান গ্রামের মানুষ ও মায়া।