ক্যানিংয়ে মেয়াদ উত্তীর্ণ কেক বিক্রির অভিযোগ 'মিও আমরের' বিরুদ্ধে

 

নুরসেলিম লস্কর, ক্যানিং : মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার বিক্রির অভিযোগ এবার এরাজ্যের বেশ নাম করা কেক বেকারি সংস্থা ‘মিও আমরের ‘ বিরুদ্ধে। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ক্যানিংয়ে।
প্রসঙ্গত,বছর দুই আগে সুন্দরবনের বাসিন্দাদের দুয়ারে রকমারি কেকের সম্ভার নিয়ে সুন্দরবনের প্রবেশদ্বার ক্যানিংয়ে হাজির হয় এই বেকারি সংস্থা। আর নামকরা এই সংস্থা কে নাগালে পেয়ে সুন্দরবনের বাসিন্দা দের বাড়িতে এখন রোজ নিয়ম করে যাচ্ছে মিও আমরের প্যাকেট ভর্তি খাবার। বিশেষ করে মিও আমরের কেক ছাড়া এখন কোন জন্মদিনের পাটি কিংবা বাড়ির শিশুদের অবদার কোনটায় যেন পূরণ করা যায় না। কারণ নাম টা যেহেতু মিও আমরে। তাই চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে সুন্দরবনের বাসিন্দারা।
কিন্তূ সুন্দরবনের বাসিন্দাদের সেই বিশ্বাসে যেন জল ঢেলে দিল মিও আমরে! গত শুক্রবার রাত্রে! অভিযোগ, বাসন্তীর গৌরদাস পাড়া এলাকার বাসিন্দা বাপন দিন্দা কলকাতা থেকে বাড়ি ফেরার পথে ক্যানিং স্টেশন সংলগ্ন মিও আমরের দোকান থেকে তার বাচ্ছাদের জন্য চার, পাঁচ পিস কেক কিনে নিয়ে যায়। আর সেই কেক খাওয়ার পরই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে বাপন বাবুর বছর ছয়ের পুত্র তাতান দিন্দা । রীতিমতো বমি, পায়খানা শুরু হয়ে যায় তার ।

সুস্থ বাচ্ছা কিভাবে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে গেল সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতে বাপন দিন্দার স্ত্রীর সন্দেহ হয় মিও আমরে থেকে আনা কেকের উপরে। আর সন্দেহ মতোই গিয়ে কেকের প্যাকেট খুলে দেখে চক্ষু চরকগাছ বাপন ও তার স্ত্রীর। কারণ সদ্য আনা কেক গুলি মেয়াদ উত্তীর্ণ। তার পর তড়িঘড়ি ছেলে নিয়ে ঐ রাত্রে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে ছোটেন তারা। তার পর সেখানে রাত ভোর চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া তাতান কে। এখন অনেক টা ভালো আছে তাতান।


আর নামি ব্যান্ডের থেকে এমন ভাবে প্রতারিত হয়ে বাপন দিন্দা বলেন, “আমরা সুন্দরবনের সাধারণ মানুষ বলে কি আমাদের সাথে এমন ব্যবহার করতে সাহস পেল ঐ সংস্থা? আর সব চেয়ে বড়ো অবাক হলাম যখন মেয়াদ উত্তীর্ন খারাপ টা নিয়ে আমরা ঐ দোকানে গেলাম তখন দোকানের মালিক প্রথমেই আমাকে টাকা ফিরৎ দিচ্ছেন!একবারও জিজ্ঞাসা করলেন না যে আমার বাচ্চা টা কেমন আছে? সত্যি বলতে এমন আমানবিক রূপ দেখবো ওদের। তা কখনো আসা করিনি। আর এমন বেআইনি কাজের জন্য অভিযোগ করার জন্য আমি যখন ফুড সেফটি ডিপার্টমেন্ট কে ফোন করলাম তারা বললো অনলাইনে অভিযোগ করতে! আচ্ছা বলুন তো আমাদের মতো সুন্দরবনের মানুষ দের কি কোন দাম নেই সরকারের কাছে? আর বাপন বাবুর অভিযোগ সম্পর্কে মিও আমরের ঐ দোকানের মালিক বলেন,”আমাদের ঐ কেক টি মেয়াদ উত্তীর্ণ নয় তারিখ টা প্রিন্ট করার সময় ভুল প্রিন্ট হয়েছে!যার জন্য আমরা ক্ষমা প্রার্থী।

আর আমাদের প্রত্যেক দিনের অবিকৃত খাবার গুলি কোম্পানি রোজ রিটার্ন করে নেয় তাই আমাদের তরফ থেকে এমন ভুল কোন দিন হওয়ার নয়। তবে বাপন বাবুর বাচ্ছার ব্যাপার টা খুবই দুঃখ জনক,ওর সুস্থতা কামনা করি আমরা”। তবে,এদিনের এই অভিযোগ মিও আমরে অস্বীকার করলে সম্প্রতি এরাজ্যের আনাচে-কানাচে আগাছার মতো গজিয়ে উঠেছে বিভিন্ন খাবারের দোকান। সেই দোকানগুলোতে সঠিকভাবে প্রশাসনিক নজরদারি না থাকায় খাবারের নামে সাধারণ মানুষের হাতে বিষ তুলে দেওয়া হচ্ছে বলে বার বার অভিযোগ উঠে আসছে । খাবারের দোকানে এই ধরনের গাফিলতির জেরে ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ। এখন দেখা খাবারের নামে বিষ বিক্রি করা এরকম বেকারীর গুলির বিরুদ্ধে কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে খাদ্য দপ্তর ও রাজ্য প্রশাসন তা এখন দেখার বিষয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন