কালীপুজোর আগে ‘ডানা’র থাবা: ঘূর্ণিঝড়ে বিপর্যস্ত হতে পারে বাংলা

কালীপুজোর আগে ‘ডানা’র থাবা: ঘূর্ণিঝড়ে বিপর্যস্ত হতে পারে বাংলা



প্রশান্ত সরকার - ঝড়খালী


কালীপুজোর প্রাক্কালে বাংলার উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’র তাণ্ডবের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক আবহাওয়া মডেলের তথ্য অনুযায়ী, বঙ্গোপসাগরের উপর এই ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি বৃহস্পতি বা শুক্রবারের মধ্যে তৈরি হতে পারে এবং এর গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। কাতার এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম দিয়েছে ‘ডানা’।



আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, রবিবার আন্দামান সাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা মঙ্গল বা মঙ্গলবারের মধ্যে মধ্য বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপে পরিণত হবে। এরপরে বৃহস্পতিবার এটি আরও শক্তি সঞ্চয় করে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে এবং ক্রমশ ঘূর্ণিঝড়ের আকার ধারণ করতে পারে। এই ঘূর্ণিঝড় অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে মায়ানমার পর্যন্ত যে কোনও উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে।

মৎস্যজীবীদের জন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে, বিশেষ করে মঙ্গল থেকে বুধ পর্যন্ত সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে, কারণ সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠতে পারে। বঙ্গোপসাগরে প্রবল ঝোড়ো হাওয়া বইবে, যার গতিবেগ প্রায় ৫৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা হতে পারে। এই পরিস্থিতি বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী এলাকাগুলিকে সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ মূলত ওড়িশা থেকে বাংলাদেশের খুলনার মধ্যে আঘাত হানতে পারে। কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, বিশেষ করে বুধ ও বৃহস্পতিবার থেকে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, নিম্নচাপের কারণে উত্তরবঙ্গেও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। গত মে মাসে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ যে ভাবে সুন্দরবন ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় তাণ্ডব চালিয়েছিল, সেই অভিজ্ঞতা এখনও মানুষের স্মৃতিতে সতেজ। ‘ডানা’ও যদি সেই মাত্রায় পৌঁছায়, তবে বাংলার উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলোতে যথেষ্ট ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের সর্বাধিক গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিমি হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, তবে এর প্রকৃত প্রভাব এখনও পরিষ্কার নয়।



৩১ অক্টোবর কালীপুজোর আগে এই ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য আগমন বাংলার মানুষকে শঙ্কিত করেছে। এখনই আবহাওয়া বিভাগ থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যাতে সবাই সতর্ক থাকে এবং পরিস্থিতির উপর নজর রাখে। বিশেষত যারা উপকূলবর্তী অঞ্চলে থাকেন তাদের জন্য এই সতর্কতা গুরুত্বপূর্ণ। ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ যদি শক্তিশালী আকার ধারণ করে, তবে এটি কালীপুজোর উচ্ছ্বাস ম্লান করে দিতে পারে।আবহাওয়া দপ্তর ও প্রশাসনের তরফ থেকে যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তবে সাধারণ মানুষকেও সচেতন এবং সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন